সোমবার, ১৭ Jun ২০২৪, ০৬:৪৩ অপরাহ্ন

লেবাননের বৈরুতে বিস্ফোরণ, দুঃসহ স্মৃতি ভুলে থাকতে চান ১১০ নাবিক

লেবাননের বৈরুতে বিস্ফোরণ, দুঃসহ স্মৃতি ভুলে থাকতে চান ১১০ নাবিক

চারদিকে কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। ভেতর থেকে ভেসে আসছে আর্তচিৎকার। বাঁচার আশা মনে হচ্ছিল শেষ। উপায় না দেখে নিজেকে সে সময় খুব অসহায় লাগছিল। মুহূর্তে অন্যদের সাহায্যে জাহাজ থেকে নাবিকদের বের করে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো সম্ভব হয়। সেদিনের ভয়াবহ স্মৃতি নাবিকরাও আর মনে রাখতে চান না। কিন্তু আনমনেই ঘুরেফিরে সেই স্মৃতি মনে ভাসে। গতকাল রবিবার সকালে চট্টগ্রামের ঈশা খাঁ নৌঘাঁটিতে লেবাননের বৈরুতে বিস্ফোরণের মুহূর্তের অসহায়ত্ব ও ভয়াবহ স্মৃতির কথা বলছিলেন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত ‘বিএনএস বিজয়’ জাহাজের ক্যাপ্টেন জয়নুল আবেদিন।

ক্যাপ্টেন বলেন, বৈরুত সমুদ্রবন্দরে বিস্ফোরণস্থলের মাত্র সাড়ে ৩০০ মিটারের মধ্যে ছিল জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘বিএনএস বিজয়’। বিস্ফোরণের মুহূর্তে আমি বাইরে ছিলাম। ফিরে এসে দেখি জাহাজ কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। চারদিক থেকে ভেসে আসছে আর্তচিৎকার। আমার জাহাজে প্রবেশের সব চেষ্টা ব্যর্থ হলে জাতিসংঘ মিশনে দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে সাহায্য চাই। তারা দ্রুত এসে জাহাজ থেকে নাবিকদের উদ্ধার করে। কিন্তু নাবিকদের উদ্ধারের চেয়েও কঠিন ছিল তাদের হাসপাতালে নেওয়া। সব রাস্তা আটকে গিয়েছিল।

ওই বিস্ফোরণে জাহাজটির ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি গুরুতর আহত হয়েছিলেন ২১ নৌসেনা। জাহাজে ছিলেন ১১০ নৌসেনা। সবাই এখন সুস্থ আছেন।ভয়াবহ স্মৃতি নিয়ে নাবিকরাও নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। লেবানন বন্দরে বিস্ফোরণ-পরবর্তী মুহূর্তে প্রচ- কম্পনের সৃষ্টি হয়। তা থেকে সাগরে সৃষ্টি হয় বড় বড় ঢেউ।

গতকাল বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘বিএনএস বিজয়’ ভূমধ্যসাগরের লেবাননে মাল্টিন্যাশনাল মেরিটাইম টাস্কফোর্সের আওতায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সফলভাবে দায়িত্ব পালন শেষে দেশে ফেরে। বিস্ফোরণের ভয়াবহ স্মৃতি নিয়ে দেশে ফিরেছেন শান্তি মিশনে নিয়োজিত ১১০ নৌসেনা।চট্টগ্রামের ঈশা খাঁ নৌঘাঁটিতে পৌঁছলে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল জাহাজটি গ্রহণ করে বিস্ফোরণে আহত নাবিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

এর আগে ২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিতে লেবানন যায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘বিএনএস বিজয়’। এ সময় জাহাজটি লেবাননের জলসীমায় মেরিটাইম ইন্টারডিকশন অপারেশন, সন্দেহজনক জাহাজ এয়ারক্রাফটের ওপর নজরদারি, দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজে উদ্ধার তৎপরতা ও লেবাননি নৌবাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদানসহ দক্ষতার সঙ্গে নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে সুনাম অর্জন করে। জাহাজটি টানা তিন বছর লেবাননে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ৩৩০ জন সদস্য পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877